alovera

অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

বন্ধুরা এখন আমরা জানব অ্যালোভেরার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে ।

অ্যালোভেরা এমন একটি ভেষজ উপাদান যেটির সাথে আমরা কোন না কোন ভাবে পরিচিত ।অ্যালোভেরা এক ধরণের আয়ুর্বেদিক ঔষুধ। এটি অনেক ধরনের রোগ নিরাময়ে করতে সক্ষম । অ্যালোভেরা এর অনেক গুণাবলীর জন্য এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অ্যালোভেরা বাংলাদেশে এবং ভারতের সাথে বহু দেশে এলোভেরার প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। অ্যালোভেরা হচ্ছে এক ধরনের রসালো জাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা কেটে এটি থেকে তরল জেল বের করা হয়। এই উদ্ভিদটি অনেক মারাত্মক রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়াও এটি কুষ্ঠরোগও  নিরাময় করতেও সক্ষম হয়।এর মধ্যে আছে প্রচুর ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, সোডিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ও ফলিক অ্যাসিড ইত্যাদি। এই উদ্ভিদের আদি নিবাস হল মাদাগাস্কার ও আফ্রিকার মরু অঞ্চল । এখন আপনারা এটা পড়ে অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

অ্যালোভেরার কিছু উপকারিতা  জেনে নিন।

ব্রণ দূর করে: 

আমাদের ত্বকে অতিরিক্ত তেল জমে থাকার কারণে ব্রণর সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। ব্রণের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে অ্যালোভেরা জেল দিনে দুবার- তিন বার ব্যবহার করা উচিত। এটি প্রতিনিয়ত করলে পিম্পল ধীরে ধীরে অদৃশ্য হতে শুরু করে।

ত্বকের যত্নে:

ককককক অ্যালোভেরা জেল ত্বক সম্পর্কিত যাবতীয় বিভিন্ন সমস্যার জন্য খুব উপকারী এবং কার্যকরী। অ্যালোভেরা জেল ত্বক কে  হাইড্রেটেড এবং পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে । এটি ত্বকের পোড়া, ক্ষত, দাগ দূর করতে অনেক সাহায্য করে থাকে। এগুলি ছাড়াও এটি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণও নিরাময় করে।

মাংসপেশী ও জয়েন্টের ব্যথা প্রতিরোধে

অ্যালোভেরা দেহের মাংসপেশীর ব্যথা বা যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। এই অ্যালোভেরা জেলের ক্রিম যদি ব্যাথার স্থানে লাগানো হয় তাহলে ব্যাথা কমে যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্যের দূর করে:

কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি সমস্যা যা নিয়ে সবাই চিন্তিত। এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে ওঠার জন্য অ্যালোভেরার রস পান করা  উচিত, এটি ব্যক্তিকে মল পাস করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে অ্যালোভেরার রস পান করুন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পান।

ওজন হ্রাস করে:

আপনার শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমাতে আপনাকে প্রতিদিন অ্যালোভেরার রস খাওয়া উচিত । অ্যালোভেরার জুসে এমন বিশেষ কিছু খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ফ্যাট কমায়। এলোভেরা ওজন নিয়ন্ত্রণে অনেক ভূমিকা রাখে।

pic অ্যালোভেরা
pic -অ্যালোভেরা

উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে:

শরীরে পরিমাণ মতো কোলেস্টেরল থাকা প্রয়োজন। তবে বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকার কারণে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। খারাপ কোলেস্টেরল হার্টের অনেক ক্ষতিসাধন করে। অ্যালোভেরা বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়।

দাঁতের জন্য:

অ্যালোভেরার জুস দাঁত এবং মাড়ির ব্যথার জন্য খুবই উপকারী উপাদান। যদি দাঁতে কোন ইনফেকশন থাকে তাহলে তা দূর করে দেয়। নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস যদি খাওয়া হয় তাহলে দাঁতের ক্ষয় অনেকাংশে কমে যাওয়া।

মুখের দুর্গন্ধ দূরীকরণে:

অ্যালোভেরায় মধ্যে আছে প্রচুর ভিটামিন-সি, যা মুখের জীবাণু দূর করে মাড়ি ফোলা ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে। কোন এক গবেষণাই দেখা গেছে যে, এই অ্যালোভেরার জেল মাউথ ওয়াশ এর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

রোগ-প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:

অ্যালোভেরা হল অ্যান্টি ম্যাইকোবিয়াল এবং অ্যান্টি (anti)ফাঙ্গাল উপাদানসমৃদ্ধ এক ধরনের গাছ। অ্যালোভেরা জুস নিয়মিত পান করলে শরীরে রোগ-প্রতিরোগ ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক গুন বৃদ্ধি পায়। দেহের টক্সিন বা বিষাক্ত উপাদান দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে:

অ্যালোভেরার জুস রক্তে সুগারের পরিমাণ বজায় রাখে ও শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে। যদি ডায়াবেটিসের শুরুর দিকে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খাওয়া হয় তাহলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা অনেকাংশে সম্ভব। সুতরাং খাওয়ার আগে বা পরে নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস পান করুন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস ঠিক নিয়ন্ত্রনে থাকবে।

হজমশক্তি বৃদ্ধি করে:

হজমশক্তি উন্নত করতে অ্যালোভেরার জুসের কোন জুড়ি নেই। অ্যালোভেরার জুস কিন্তু অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে থাকে।অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধ করে, যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। আবার এই অ্যালোভেরার রস ডায়রিয়া রোগের বিরুদ্ধেও খুব ভাল কাজ করে থাকে ।

আরও দেখতে ক্লিক করুন:- 👎 👎ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

হার্ট সুস্থতায়:

অ্যালোভেরার জুস হার্টকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে খুবই প্রয়োজন। এই অ্যালোভেরা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এটি আবার ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রন করে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তের মধ্যে অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেয়। আবার এই অ্যালোভেরার দেহের দূষিত রক্ত বের করে রক্ত কণিকা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে দীর্ঘদিন আপনার হৃদপিণ্ড বা হৃদযন্ত্র সুস্থ সবল থাকে।

মুখের ঘা দূর করে:

ভিটামিন বি এর অভাবে অনেকের মুখের মধ্যে ঘা সৃষ্টি হয়, আর এই মুখের ঘা ঠিক করতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকারী একটি উপাদান। ঘায়ের জায়গায় যদি অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে দেওয়া হলয় তাহলে মুখের ঘা অতি তাড়াতাড়ি ভাল হয়ে যায়।

আরও দেখুন :- কিডনী রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন।

ক্যান্সার প্রতিরোধক:

অ্যালোভেরার মধ্যে রয়েছে অ্যালো ইমোডিন, যা মেয়েদের স্তন ক্যান্সার ছড়ানোকে অনেকটা প্রতিরোধ করে। এছাড়া আরও অনেক ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে অ্যালোভেরা অনেক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে ।

চর্মরোগ ও ক্ষত দূর করে:

অ্যালোভেরা প্রাকৃতিক ঔষধিরও কাজও করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ ও ক্ষত সারায় এর জন্য এই অ্যালোভেরার জুস কিন্তুু খুবই উপকারী। প্রাথমিক চিকিত্‍সার ক্ষেএে অনেক সময় অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়।

pic alovera
pic -alovera

 অ্যালোভেরার অপকারিতাসমূহঃ

অ্যালোভেরা লাগানোর পূর্বে পরামর্শ দেওয়া হয়।  যদি কোনও ব্যক্তি অ্যালোভেরার রস পান করতে চান তবে প্রথমে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। কারণ এর রসগুলিও সময় আপনার জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

গর্ভকালীন ঝুকি:

গর্ভবতী মহিলাদের এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের অ্যালোভেরার রসের ব্যবহার এডিয়ে চলা উচিত। কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকারক হতে পারে।

কিডনির জন্য ক্ষতি:

অ্যালোভেরার রস অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়, এটি রক্তের বৃদ্ধি করে । তবে পাশাপাশি এটি কিডনিরও অনেক।ক্ষতি সাধন করে। এজন্য অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালোভেরার রস না খাওয়াই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।

অ্যালোভেরার রস অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না, কেবলমাত্র এটি ডোজ হিসাবে গ্রহণ করুন, তানাহলে আপনার ডায়রিয়া হতে পারে।

আরও দেখুন:- ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা: খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুন বিস্তারিত জানুন।

স্বাস্থের অনিয়ম:

অ্যালোভেরা ব্যবহারের কারণে যদি কোনও স্বাস্থ্য অনিয়ম হয় তবে সাথে সাথে এর ব্যবহার বন্ধ করুন এবং আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

চিকিৎসক বা গবেষকদের মতে, এই উদ্ভিদের জেল নিরাপদ তখন যখন এটি ওষুধ অথবা জেল হিসেবে শরীরের চামড়ায় প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ে যখন অ্যালোভেরার ভেতরের রসালো পদার্থ টি বের করা হয়ে থাকে তখন এর সঙ্গে ভুল বশত ‘অ্যালো লেটেক্স’ বের হতে পারে। যা মানব শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

 

Similar Posts

3 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *