pic জাকির নায়েক 1

জাকির নায়েকের জীবনী (জানা-অজানা সকল তথ্য)

বন্ধুরা এখন আমরা জানব জাকির নায়েকের জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত।

নামঃ জাকির আবদুল করিম নায়েক

জন্মঃ ১৮ অক্টোবর ১৯৬৫ সাল

জন্মস্থানঃ মুম্বাই, মহারাষ্ট ভারত

ধর্মঃ ইসলাম

জাতীয়তাঃ ভারতীয়

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ এম বিবি এস

পেশাঃ ধর্মীয় বক্তাও চিকিৎসক

সম্মাননাঃ কিং ফয়সাল (আন্তর্জাতিক পুরস্কার ২০১৫)

সন্তানঃ ফারিক নায়েক,রুশদা নায়েক,জিকরা নায়েক

বর্তমান অবস্থানঃমালয়েশিয়া

জাকির নায়েক আমার খুবই প্রিয় একজন ব্যক্তি।তিনি সমগ্র বিশ্বে ইসলামের দাওয়াত দি যাচ্ছে।ডা: জাকির নায়েক।পুরো নাম জাকির আবদুল করিম নায়েক অক্টোবর ১৯৬৫ সালে ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তিনি মুম্বাইয়ের সেন্ট পিটার্স হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। এরপর তিনি কিশিনচাঁদ চেল্লারাম কলেজে ভর্তি হন।এরপর তিনি মেডিসিনের ওপর টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড নাইর হসপিটালেও ভর্তি হয়েছিলেন। অতঃপর, তিনি ইউনিভার্সিটি অফ মুম্বাই থেকে ব্যাচেলর অব মেডিসিন সার্জারি বা এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।

১৯৯১ সালের দিকে তিনি ইসলাম-ধর্ম প্রচারের কার্যক্রম শুরু এবং আইআরএফ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।নায়েকের স্ত্রী, ফারহাত নায়েক, ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নারীদের শাখায়ও কাজ করেন।

pic জাকির নায়েক
pic জাকির নায়েক

ডাঃ জাকির বলেন তিনি আহমেদ দিদাতের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, যার সাথেও তিনি ১৯৮৭ সালে সাক্ষাত করেন। ডাঃ জাকির নায়েককে অনেক সময় ‘‘দিদাত প্লাস’’ বলা হয়, এই উপাধি দিদাত নিজেই দিয়েছিলেন।

তাছাড়াও তিনি মুম্বাইয়ের ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং ইউনাইটেড ইসলামিক এইডের প্রতিষ্ঠাতা, যা দরিদ্র ও অসহায় মুসলিম তরুণ-তরুণীদের বৃত্তি প্রদান করে থাকে। ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে জাকির নায়েককে” পিস (peace) টিভি নেটওয়ার্কের পৃষ্ঠপোষক ও আদর্শিক চালিকাশক্তি” হিসেবে বর্ণনা করা হয়ে থাকে।যে চ্যানেলটি “সমগ্র মানবতার জন্য সত্য, ন্যায়বিচার, নৈতিকতা, সৌহার্দ্য ও জ্ঞানের” প্রচারের লক্ষ্যে কাজ করে বলে এর ওয়েবসাইটেও উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে, একটি প্রেস কনফারেন্সে, জাকির নিজেকে নন-রেজিস্ট্যান্ট ইন্ডিয়ান এনআরআই (NRI)বা বছরের অর্ধেকের বেশি সময় প্রবাসে বসবাসকারী ভারতীয় হিসেবেও দাবি করেছিলেন। ভারতের সরকার তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করেছেন। ডাঃ জাকির নায়েক এখন বর্তমানে মালেশিয়ায় স্থায়ী নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করছেন।

pic jakir naik
pic jakir naik

বক্তৃতা ও বিতর্কঃ

জাকির নায়েক ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত অনেক বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন ও বিতর্কও করেছেন। তিনি বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় কোরআন ও হাদীসের আলোকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে থাকেন। বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইসলামের অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন তিনি।। নৃতত্ত্ববিদ মিস্টার  থমাস ব্লম হানসেন লিখেছেন যে, ডাঃ জাকিরের বিভিন্ন ভাষায় কুরআন ও হাদিস সাহিত্য মনে রাখার ভঙ্গী ও তার ধর্মপ্রচার কর্মকাণ্ড মুসলিমদের মাঝে তাকে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়ও করে তুলেছেন ।তার অনেক বিতর্ক রেকর্ড করা হয় এবং ভিডিও, ডিভিডি আকারে ও অনলাইনে বিস্তৃত পরিসরে বিতরণও করা হয়ে থাকে। তার আলোচনা ইংরেজিতে রেকর্ড করা হয়ে থাকে এবং সপ্তাহ শেষে মুম্বাইয়ের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন ক্যাবল নেটওয়ার্কে এবং তার নিজস্ব প্রযোজনাধীন পিস টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়। তার আলোচনার বিষয়বস্তুগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল: “ইসলাম ও আধুনিক বিজ্ঞান”, “ইসলাম ও খ্রিস্টধর্ম”, এবং ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ।

আরও জানুন:- পাওলো দিবালার জীবনী (বায়োগ্রাফি):ছবি

ডাঃজাকির নায়েকের প্রথম বিতর্ক হয় ১৯৯৪ সালে, বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের “লজ্জা” নামক এই বইকে কেন্দ্র করে মুম্বাই মারাঠি পত্রিকার সংঘ কর্তৃক আয়োজিত একটি বিতর্ক, যার শিরোনাম ছিল “ধর্মীয় মৌলবাদ কি মত-প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাধাস্বরূপ?”। চারজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে কয়েকঘণ্টা ব্যাপী এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জাকির বইটি থেকে ইসলামকেন্দ্রিক বিভিন্ন উদ্ধৃতিকে ভুল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি হিসেবে দাবি করে বক্তব্য দেন এবং তা সবার নজর কেড়েছিলেন ।তার অন্যতম বিখ্যাত বিতর্ক হয় ২০০০ সালের এপ্রিলে ‘বিজ্ঞানের আলোয় কুরআন ও বাইবেল’ বিষয়ে আমেরিকার শিকাগোতে উইলিয়াম ক্যাম্পবেলের সাথে।তিনি বলেন, ‘ইসলাম একটি কার্যকারণ ও যুক্তির ধর্ম এবং কুরআনে বিজ্ঞান বিষয়ক প্রায় ১০০০ আয়াতও আছে। সেখানেও তিনি পশ্চিমা কনভার্টের সংখ্যা ব্যাখ্যা করেছিলেন । জাকিরের অন্যতম জনপ্রিয় থিম হল বিজ্ঞানের সূত্র দিয়ে কোরআনকে যাচাই কর নেওয়া । ২১ জানুয়ারি ২০০৬ জাকির শ্রী শ্রী রবিশঙ্করের সাথে ‘ইসলাম ও হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর’ বিষয়ে ব্যাঙ্গালোরে বিতর্ক করেছিলেন । ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, জাকির নায়েক ভারত থেকে সরাসরি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে অক্সফোর্ড ইউনিয়নের সঙ্গে কথোপকথনও করেছিলেন।

শান্তি সম্মেলন সম্পাদনাঃ

২০০৭ এর নভেম্বর থেকে জাকির প্রতিবছর মুম্বাইতে সিয়নের সুমাইয়া গ্রাউন্ডে একটি ১০-দিনের শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করা হতো। সেখানে নায়েক সহ আরও বিশজন ইসলামী বক্তা ইসলামের উপর বক্তব্য উপস্থাপন করেতেন।

২০০৪-এ অস্ট্রেলিয়ায় সফর সম্পাদনাঃ

শুধু ইসলামই নারীকে সমতা দেয় -এ বিষয়ে জাকির নায়েক ২০০৪ সালে ‘ইসলামিক ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক অফ অস্ট্রেলিয়া’-এর আমন্ত্রণে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে বিতর্ক করেছিলেন ।তিনি বলেন যে, ‘পশ্চিমা পোশাক মেয়েদের ধর্ষণের অন্যতম একটি কারণ। কারণ, এটা মেয়েদেরকে পর-পুরুষের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে থাকে । দ্য এজ পত্রিকার সুশি দাস মন্তব্য করেন যে , নায়েক ইসলামের উপদেশের ও আত্মিক শ্রেষ্ঠত্বের উচ্চ প্রশংসা করেন এবং পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ ভাবে যে বিশ্বাস দেখা যায় তাকে ব্যাঙ্গ করেন।

যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নিষেধাজ্ঞাসম্পাদনা২০১০

ডাঃ জাকির নায়েককে ২০১০ এর জুন মাসে যুক্তরাজ্যে ও কানাডায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে । একজন মুসলিম কানাডিয়ান কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা তারেক ফাতাহ জাকির নায়েকের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সেদেশের সংসদের কাছে সতর্ক করার পর কানাডায় তার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লন্ডন এবং শেফফিল্ডে তার বক্তৃতা আয়োজনের পর স্বরাষ্ট্র সচিব “থেরেসা” মে তার যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেন।   নিষেধাজ্ঞার রায়ে বলেন, “জাকির নায়েকের অসংখ্য মন্তব্য তার কাছে অগ্রহণযোগ্য আচরণের প্রমাণ হিসেবে আমার কাছে আছে। নায়েক এটাদাবি করেন যে, স্বরাষ্ট্র সচিব একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, কোন নৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, এবং তার আইনজীবী বলেন যে এই সিদ্ধান্তটি ছিল বর্বর এবং অমানবিক সিদ্ধান্ত। তিনি আরও দাবি করেন যে তার মন্তব্যকে অপ্রাসঙ্গিকভাবেও গ্রহণ করা হয়েছে।চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট নায়েককে সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন যে, এই নিষেধাজ্ঞাটি বাক স্বাধীনতার উপর একটি আক্রমণস্বরূপ দিক।বলা হয়েছিল নায়েক উচ্চ আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করারও ব্যবস্থা নেবেন। তার আইনি পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এই আবেদনটি ২০১০-এর ৫ই নভেম্বর খারিজ করে দেওয়া হয়েছে ।

আরও দেখুন:- নেইমারের জীবনী ( বায়োগ্রাফি): ছবি,ধর্ম,স্ত্রী, গোল সংখ্যা

২০১৪ সালের দিকে গাম্বিয়ায় সফর সম্পাদনাঃ

২০১৪ সালের দিকে নায়েক আফ্রিকার একটি মুসলিম দেশ গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া জাম্মেহর আমন্ত্রণে গাম্বিয়াও সফর করেছেন ।সেখানে ১১-২২ অক্টোবরের মধ্যে তিনি চারটি বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন।বক্তৃতাগুলো গাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, প্যারাডাইস সুটস হোটেল, কানালাই এবং কলইয়ের কাইরাবা বিচ হোটেলেই অনুষ্ঠিত হয়েছে । রাষ্ট্রীয় ক্যাবিনেট মন্ত্রীগণ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, ছাত্রছাত্রী এবং সহস্র দর্শক তার বক্তৃতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল।এর পাশাপাশি ও তিনি রাষ্ট্রপতি ও গাম্বিয়া সুপ্রিম ইসলামী কাউন্সিলের সঙ্গে পৃথক সাক্ষাৎ করেছেন এবং গাম্বিয়ার ইমামদের সঙ্গে একটি ইসলামী আলোচনা সভায় অংশ গ্রহন করেন ।

২০১২ ও ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ায় সফর সম্পাদনাঃ

ডাঃ জাকির নায়েক এর ভিডিও”মালয়েশিয়ায় সফর’ ২০১২ সালের দিকে জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় মারা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জহর বারু, কুয়ান্তান ও পুত্রা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারেও বক্তৃতা দিয়েছেন ।হিন্দ অধিকার সংগ্রাম শক্তির “HINDRAF” সদস্যদের প্রতিবাদের পরও মালয়েশিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং প্রায় কয়েক হাজার লোক বিভিন্ন স্থানে তার বক্তৃতার মধ্যে উপস্থিত হয়ে ছিলেন।নায়েকের বক্তৃতার আয়োজকগণ বলেন যে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য প্রচার করাই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য । ২০১৬ সালের ৯থেকে ২০ এপ্রিল নায়েক মালয়েশিয়ায় আরও ছয়টি বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন। হিন্দরাফ ও কিছু স্থানীয় এনজিও সংস্থা সেখানে তার “ইসলাম ও হিন্দুধর্মের সাদৃশ্য” এবং”কুরআন কি ঈশ্বরের বানী” নামক দুটি বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে অভিযোগও করেছিল যে, এটি আন্তঃধর্মীয় উত্তেজনা বৃদ্ধিতে উস্কানিমূলক হতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার বক্তৃতাগুলো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক অনুষ্ঠিত হয়েছিল

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *