ডি মারিয়ার জীবনী:ছবি, ফ্যামিলি
বন্ধুরা এখন আমরা জানবো ডি মারিয়ার জীবনী সম্পর্কে।
ডি মারিয়ার জীবনি
ডি মারিয়ার ছবি
ডি মারিয়ার জীবনি ভিডিও
- নামঃ আনহেল ফাবিয়ান ডি মারিয়া
- জন্মঃ ১৪ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮
- জন্মস্থানঃ রোজারিও আর্জেনটিনা
- উচ্চতাঃ ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি
- ধর্মঃ খ্রিস্টান
- জাতীয়তাঃ আর্জেনটাইন
- জাতীয় দলঃ আর্জেনটিনা
- মাঠে অবস্থানঃ উইঙ্গার
- বর্তমান ক্লাবঃ পিএস জি
- জার্সি নম্বরঃ ৭
ডি মারিয়া বর্তমান বিশ্বের এক পরিচিত নাম। কে না চেনে তাকে, তিনি কোটি ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি খেলার মধ্যে নৈপুণ্য দেখিয়ে থাকেন। এক কথায় তিনি বর্তমান সময়ে অনেক ভালো খেলে থাকেন।
আনহেল ফাবিয়ান ডি মারিয়া এর্নান্দেজ (স্পেনীয়: Angel Fabian di Maria Hernandez; জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮) একজন আর্জেন্টাইন ফুটবলার যিনি বর্তমানে উইঙ্গার হিসেবে ফরাসী ক্লাব পিএস জি এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলে থাকেন। তার কয়েকটি ডাকণামও রয়েছে এল আনহেলিতো, দি মাহিয়া, এল ফ্লাকো, এল পিবিতো,এবং ফিদেও। তাকে এগুলো আদর করে ডাকা হত।
একজন শিশু হিসেবে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া খেলাধুলায় ছিলেন অস্বাভাবিক ভাবে সক্রিয়। একজন ডাক্তারের পরামর্শে তাকে 3 বছর বয়সে তাকে ফুটবলের জন্য সাইন আপ করা হয়েছিল।
ডি মারিয়া ফুটবল অনুশিলন করার পর তার চিকিৎসক তার মা-বাবাকে প্ররনা দিয়েছিলেন তার ছেলেকে যেন খেলার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং ডি মারিয়াকে যেন খেলাধুলা করার অনুমতি দেন।
ডি মারিয়া ফুটবল খেলার পাশাপাশি তার বাবা- মাকেও তার দুই বোনকে স্থানীয় কয়লার খনিতে কাজ করতে সহায়তা করে অনেক সহায়তা করেছিলেন। তার পরিবারের দারিদ্রতার কারণে তার ফুটবল বুট জুতো কেনা সহ ডি মারিয়ার সখকে সামলানে তার মা-বাবার পক্ষে অনেক কষ্ট সাধ্য ছিল।
ডি মারিয়া ১৯৯৫ সালের দিকে স্থানীয় ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রাল এ যোগদান করেছিলেন। তিনি ৭ বছর বয়সে একটি ক্ষুদ্র স্থনীয় দলে খেলার জন্য সুযোগ পান। ২০০৫ সালের দিকে ডি মারিয়া যুব ফুটবল একাডেমির থেকে একটি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন
ব্যক্তিগত জীবন
২০১১ সালের জুলাইয়ের শেষে দি মারিয়া তার মেয়ে বন্ধু হোর্হেলিনা কার্দোসোকে বিয়ে করেন। হোর্হেলিনা থাকেন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। তখন তাদের বিয়ের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দিয়েগো মারাডোনার কন্যা জিয়ান্নিনা মারাডোনা।
দি মারিয়ার বাবাও ছিলেনএকজন ফুটবলার , তিনি রিভার প্লেটের রিজার্ভ দলে খেলতেন।
ডি মারিয়ার প্রেমের গল্প
ডি মারিয়া তার বয়সের চেয়ে ৫ বছরের বড় এক সোনালি চুলের মেয়ের প্রেমে পড়ে যান। আর সেই মেয়েটির নাম হচ্ছে( জর্জিলিনা কার্ডাসো)।
জর্জিলিনা তার সুন্দর শারীরিক ফিগারের জন্য পুরো আর্জনটিনা জুড়ে পরিচিত মুখ।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সম্পাদনা সমূহ
আর্জেন্টিনার হয়ে খেলছেন ডি মারিয়া।
২০০৭ সালে আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব ২০ দলে জায়গা করে নেন ডি মারিয়া। ২০০৭ দক্ষিণ আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশীপে ও তিনি অংশগ্রহণ করেন। ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপেও তিনি আর্জেন্টিনা দলে জায়গা পেয়ে যান । প্রতিযোগিতায় তিনি তিনটি গোল করে ফেলেন এবং তার দল আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয়।
২০০৮ সালের ২৮ জানুয়ারি, ডি মারিয়া এবং তার কয়েকজন অনূর্ধ্ব ২০ সতীর্থ বেইজিং অলিম্পিকের দলে ডাক পেয়ে সেখানে পাডি জমান। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার অতিরিক্ত সময়ের ১০৫ তম মিনিটে লিওনেল মেসির পাস থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে জয়সূচক গোল করেন তিনি। খেলার মধ্যে আর্জেন্টিনা ২–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ২৩ আগস্ট, প্রতিযোগিতার ফাইনালে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলার একমাত্র গোলটি করেন ডি মারিয়া এবং টানা দ্বিতীয়বারের মত ফুটবলে অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয় লাভ করে আর্জেন্টিনা।
২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের ২৩ সদস্যের স্কোয়াডে জায়গা পেয়ে যান ডি মারিয়া। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট, ডি মারিয়া তার ক্যারিয়ারে সেই প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওই প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা ১–০ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে।
রোজারিও সেন্ট্রালসম্পাদনা
২০০৫ সালে রোজারিও সেন্ট্রালে অভিষেকের মাধ্যমে ডি মারিয়া তার পেশাদারী ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০০৭ সালে তিনি রাশিয়ান প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব রুবিন কাজানে খেলার সুযোগ পেয়ে যান । প্রথম রাজি হলেও, পরে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেলেন। ২০০৭ সালের ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে দূর্দান্ত নৈপূন্যের কারণে তিনি বিভিন্ন ইউরোপীয় দলের নজরে আসেন এবং অবশেষে তিনি বেনফিকাতে যোগদান করেন।
বেনফিকা সম্পাদনা
২০০৭ সালের জুলাইয়ে বেনফিকাতে যোগ দান করেন ডি মারিয়া। খুব দ্রুত সময়ে তিনি তার সামর্থের জানান দেন। ২০০৯ সালের অক্টোবরে, ডি মারিয়া বেনফিকার সাথে ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নতুন করে চুক্তি সাক্ষর করে ফেলেন। চুক্তিতে তার মূল্য রাখা হয়েছিল ৪০ মিলিয়ন ইউরো। এর কয়েকদিন পর দিয়াগো মারাডোনা তাকে আর্জেন্টিনার পরবর্তী সুপারস্টার বলে ঘোষণা করে দেন ।
২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, লেইক্সোস এসসি এর বিপক্ষে দি মারিয়া তার প্রথম হ্যাট্রিক অর্জন করেন। খেলায় বেনফিকা ৪–০ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে।
রিয়াল মাদ্রিদসম্পাদনা
২০১০–১১ মৌসুমসম্পাদনা
২০১০ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন ডি মারিয়া। ৭ জুলাই তিনি বুয়েনোস আইরেস থেকে সরাসরি মাদ্রিদে পৌছে যান এবং ৮ জুলাই মেডিকেল টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে যান।
২০১০ সালের ৪ আগস্ট, ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় তার অভিষেক হয়ে যায় । খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–২ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করেন। ২২ আগস্ট হারকিউলিসের বিপক্ষে আরেকটি প্রীতি খেলায় দি মারিয়া রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তার প্রথম গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–১ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে। প্রাক মৌসুমের শেষ খেলায় অ্যাটলেটিকো পেনারোলের বিপক্ষে দি মারিয়া একক নৈপূন্যে একটি গোল করে ফেলেন। সেই খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ২–০ গোলে ব্যবধানে জয় লাভ করে।
২৯ আগস্ট, মায়োর্কার বিপক্ষে লা লিগায় তার অভিষেক হয়। খেলাটি গোলশূন্য তখন ড্র হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর, সোসিয়েদাদের বিপক্ষে খেলায় তিনি লীগে তার প্রথম গোল করেছিলেন । খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ২–১ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে। এর দশ দিন পর চ্যাম্পিয়নস লীগে অক্সারের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ১–০ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলার মধ্যে একমাত্র গোলটি করেন ডি মারিয়া।১৯ ডিসেম্বর সেভিয়ারবিপক্ষে তিনি একটি বিতর্কিত গোল করেছিলেন। ২২ ডিসেম্বর, লেভান্তের বিপক্ষে খেলায় তিনি করিম বেনজেমার দুইটি গোলে এবং ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর একটি গোলের সহায়তা করেন। খেলা মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদ ৮–০ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে। চ্যাম্পিয়নস লীগের রাউন্ড অব ১৬ এর দ্বিতীয় লিগের খেলায় অলিম্পিক লিওনাইসের বিপক্ষে ডি মারিয়া একটি গোল করেছিলেন। সেই খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–০ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে এবং সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালের দরজায় গিয়ে পৌছায়।
চ্যাম্পিয়নস লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে টর্টেনহামের বিপক্ষেও ডি মারিয়া একটি গোল করেছিলেন। ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল, কোপা দেল রে’র ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলায় অতিরিক্ত সময়ের ৩১তম মিনিটে তাকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল । খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ১–০ গোল ব্যবধানে জয় লাভ করে। দি মারিয়ার সহায়তায় খেলার একমাত্র গোলটি করেছিলেন ক্রিষ্টিয়ানো রোনালদো। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ কোপা দেল রের শিরোপা জিতেছিলেন। এটাই ছিল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ডি মারিয়ার প্রথম শিরোপা।
২০১১–১২ মৌসুমসম্পাদনা
২০১১–১২ মৌসুমের প্রথম দিক ডি মারিয়ার খুব একটা ভাল যায়নি। গ্রীষ্মকালীন বিরতির পর লীগের দ্রুততার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাকে। তবে তিনি খুব দ্রুতই অনেক চেষ্টার ফলে উন্নতি করতে থাকেন। ২০১১ সালের অক্টোবর থেকে কাকা এবং ওজিলের চেয়ে তিনিই ছিলেন জোসে মরিনহোর প্রথম দিকের পছন্দ।
২০১১ সালের ২৭ নভেম্বর, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদেরবিপক্ষে ডি মারিয়া ৬০ মিনিট খেলেন এবং একটি গোল করেন, রিয়াল মাদ্রিদ ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ৩ ডিসেম্বর, লা লিগায় স্পোর্তিং দি গিয়নেরবিপক্ষে তিনি একটি গোল করেন এবং দলকে ৩–০ গোল ব্যবধানে জয় এনে দেন।
২০১২–১৩ মৌসুমসম্পাদনা
কর্ণার কিক নিচ্ছেন আনহেল দি মারিয়া।
এই মৌসুমে ডি মারিয়া প্রথম গোল করেন ক্যাম্প ন্যুতেবার্সেলোনার বিপক্ষে ২০১২ স্পেনীয় সুপার কাপের প্রথম লিগের খেলায়। ভিক্টর ভ্যালদেসের ভুলের সুযোগ নিয়ে খেলার ৮৫তম মিনিটে তিনি এই গোল করেন, যদিও খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–২ গোল ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন।
যদিও এই মৌসুম তার সেরা সময় ছিলনা, তবুও তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সময় জলে উঠেছিলেন। বিশেষ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর গোল করার সময় সহায়তা করেছিলেন। লীগে ও তিনি বেশ কিছু গোলে সহায়তা করেছিলেন। তিনি মোট ৪৬টি খেলায় মাঠে নামেন এবং ৮টি গোল করেছিলেন, যার মধ্যে ছিল আতলেটিকো মাদ্রিদ এবং মালাগার বিপক্ষে করা গোল।