লিওনেল মেসির জীবনী (ধর্ম,ক্লাব,গোলসংখ্যা)
প্রিয় বন্ধুরা, বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা জনপ্রিয় ফুটবলার লিওনেল মেসি। যিনি কোটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। লিওনেল মেসি ফুটবল ম্যাজিসিয়ান নামে বিখ্যাত। আজকে আমরা ফুটবলার মেসির জীবন কাহিনী বিস্তারিত জানব।
একনজরে মেসি সম্পর্কে জানুনঃ
- পুরো নামঃ লিওনেল আন্দ্রেস মেসি
- জন্ম: লিওনেল মেসি ১৯৮৭ সালের ২৪শে জুন আর্জেনটিনায় জন্মগ্রহন করেন।
- উচ্চতা: ১.৭ m
- স্ত্রী: আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো (২০১৭ সালে বিয়ে করেন।
- বাবাঃ তার বাবার নাম হোর্হে হোরাসিও মেসি তিনি আর্জেনটিনার রোজারিওতে স্টিল কারখানায় কাজ করতেন।
- মাতাঃ তার মায়ের নাম সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিওিনি।তার পিতার আদি বাসস্থান ইতালির আকোনা শহরে।তার পূর্বপুরুষদের মর্ধে একজন ইতালি ছেড়ে ১৮৮৩ সালে আর্জেনটিনায় চলে আসে। মেসিরা চার ভাই-বোন তার এক ছোট বোন এবং দুই বড় ভাই রয়েছে।মেসির বয়স যখন পাচ বছর তখন সে তার স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে খেলা শুরু করেন যার কোচ ছিলেন তার পিতা হোর্হে
- সন্তান: তার তিন সন্তান। যারা হলেনঃ থিয়াগো মেসি রোকুজ্জো, সিরো মেসি রোকুজ্জো, মাতেও মেসি রোকুজ্জো।
- ধর্মঃ খ্রিস্টান
- জাতীয়তাঃ আর্জেন্টিনীয়
- পড়াশোনাঃ elementary school
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইটঃ http://www.messi.com/
- বেতন: মেসির বর্তমান বেতন ৭১ মিলিয়ন EUR (২০২১)
- জাতীয় দলঃ আর্জেন্টিনা
- বর্তমান ক্লাবঃ পি এস জি
- বর্তমান টিম: পিএসজি
- জার্সি নম্বরঃ ১০
- মেসির মোট গোল সংখ্যা কত (২০২১) : বার্সেলোনার হয়ে ৭১৭ ম্যাচে ৬২৬ টি গোল করেন। এর মধ্যে লা লিগাতে ৪৩৭ টি, UEFA Champions League এ ১১৪ টি আর Copa Del Ray, Spanish Super Cup, Club World Cup মিলিয়ে রয়েছে ৭৫টি।
মেসির জীবন কাহিনী বিস্তারিত
লিওনেল মেসি রোজারিও ভিওিক ক্লাব নিওয়েল’স ওল্ড বয়েজে ১৯৯৫ সালে যোগ দেন।মেসি একই সময়ে স্থানীয় যুব শক্তিশালী ক্লাবের সদস্য হয়ে পড়ে যার ফলে পরবর্তীতে এই ক্লাবটি চার বছরে মাএ একটি খেলায় পরাজিত হয়েছে।তখন মেসি স্থানীয়ভাবে পরিচিত হয়ে উঠেছে “দ্য মেশিন অফ “৮৭” নামে।মেসিকে সবাই মজা করে “দ্য মেশিন অফ ‘৮৭”বলে ডাকে।কারণ তখন কার সময় যারা পরিচিত হয়ে উঠেছিল তাদের সবাইকে জন্মসাল “১৯৮৭” সহকারেই নাম দেওয়া হত।
- মেসির গ্রোথ হরমোন সমস্যার কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তার ভবিষৎ।মেসি সেই ছোটবেলাথেকেই ফুটবল খেলা পাগল ছিলেন।তার ছোট বেলায় সপ্নছিল সে অনেক বড় মাপের ফুটবলার হবে।মেসির ফুটবলের প্রতি ভালোবাসার কারণে সে স্থনীয়ভাবে অনেক পরিচিতি লাভ করে।মাএ “১১”বছর না পেরোতেই সে এক কঠিন রোগের সম্মুখিন হয়।তার গ্রোথ হরমোন সমস্যা ধরা পড়ে সে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে।তার পরিবারের টাকা ছিলনা তাকে চিকিৎসা করার।মেসি সেই সময় যোগ দিয়েছিল তার স্থানীয় ক্লাব রিভার প্লেটে। তারাও পারছিলনা মেসির চিকিৎসার খরচ বহন করতে। তার চিকিৎসার খরচের পরিমাণ ছিল প্রতি মাসে ৯০০ মাকিন ডলার যেটা অনেক ব্যয়বহুল।যার কারণে মেসির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
- লিওনেল মেসির ভবিষৎ যখন অনিশ্চিত অন্ধকারে ঘেরা ঠিক তখনিই আলো জ্বলে উঠল,তখন মেসির পাশে এসে দাড়ায় তত্কালীন বার্সালোনার ক্রীড়া পরিচালক কর্লেস রেক্সাস।তিনি মেসির সম্পর্কে জানতে পেরে মেসির খেলা দেখতে আাসেন তারপর তিনি মেসির খেলা দেখে মুগ্ধ হয়ে যান।তখন তিনি মেসির সাথে চুক্তি করতে আাসেন চুক্তির সাক্ষর করার জন্য হাতের কাছে ছিলনা কোন কাগজ তখন একটি ন্যাপকিন পেপারে মেসির বাবার সাথে চুক্তি সাক্ষর সম্পন্ন করেন।
- তারপর মেসির যাএা শুরু হয় বার্সালোনা ক্লবে।মেসি ২০০০-২০০৩ সাল পর্যন্ত খেলেছেন বার্সালোনার যুব একাডেমীর ইনফান্তিল বি, কাদেতে বি এবং কাদেতে এ দলে।যখন তিনি কাদেতে এ দলে খেলেন তখন ৩০টি ম্যাচে ৩৭টি গোল করেছিলেন।২০০৩ সালে যখন অর্থনিতিক সীমাদ্ধতার কারণ হয়ে দাড়ায় তখন তাকে ক্লাব থেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল পরে যুব দলের প্রশিক্ষণ কর্মীদের কাথাতেই ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিষদ তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত পোষন করে।
২০০৩-২০০৪ মৌসুমে মেসি খেলেন পাঁচটি আলাদা দলে,এটি একটি রেকর্ড।তিনি একটি গোল করেন হুবেনিল বি দলের হয়ে এবং তারপর খেলার সুযোগ পান হুবেনিল এ দলে।তিনি সেই খেলায় ১৪টি ম্যাচে ২১ টি গোল করেছিলেন। তার বার্সালোনা সি(তের্সেরা দিভিসিওন) ২০০৩সালের ২৯এ নভেম্বর,এবং বার্সালোনা বি(সেহুদা দিভিসিওন)দলে ২০০৪ সালে অভেষেক হয়। সেই মৌসুমেই তিনি খেলেন উভয় দলের হয়ে এবং সি দলের হয়ে ১০টি ম্যাচে গোল করেছিলেন ৫টি, ৫টি খেলায় শূন্য করেছিল বি দলের হয়ে।এই দুটি দলে খেলার আগে “২০০৩ সালের ১৬ নভেম্বর তার দাপ্তরিক অভিষেক হয়েছিল। একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে পের্তোর বিপক্ষে ১৬ বছর বয়সে।
ইস্পানিওলের বিপক্ষে ২০০৪ সালে ১৬ ই অক্টোবর,.বার্সলোনার তৃৃৃৃতীয় খেলোয়াড হিসেবেে মেসির অভিষেক হয় লা লিগায় তখন তার বয়স” ১৭ বছর ১১৪ দিন”। ২০০৭ সালে মেসি বোয়ান কিরকিচ স্থান নিজের দখলে নিয়েে নেয়। আলবাকেতে বালোম্পাইয়ের বিপক্ষে সর্বকনিষ্ঠ বার্সালোনার খেলোয়াড় হিসেবে মেসি রেকর্ড করেন লা লিগায় তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর ১০ মাস ৭ দিন। তার এই রেকর্ড বেশি দিন টিকে নাই বোয়ান কিরকিচ এটি ভেঙ্গে ফেলে ২০০৭ সালে। মেসির পাস থেকেই বোয়ান কিরকিচ এই গোলটি করেছিলেন। প্রাক্তন কোচ ফ্রাংক রাইকার্ড সম্পর্কে মেসি বলেন ; আমি ভুলবনা কখনও তাকে যিনি আমার ক্যারিয়ার শুরু করার সঙ্গী হয়েছিলেন। আামার প্রতি তার আাস্থা ছিল ১৬ বছর বয়সেই। মেসি বার্সালোনার বি দলের হয়ে ওই মৌসুমেই ১৭ টি খেলাতে করেছিলেন ৬ টি গোল।
দ্বিতীয়বারের মত ২০০৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মেসির সাথে নতুন চুক্তি করে বার্সালোনা। এই সময় মেসির পারিশ্রমিক আরও বাড়নো হয় মূল দলের খেলোয়াড হিসেবে।২০১৪ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। মেসিকে স্পেনের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় ২০০৫ সালের ২৬ এ সেপ্টেম্বর এবং তাকে লা লিগায় খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠে মেসি ইতালিয়ান ক্লাব উদিনেসের বিপক্ষে তার প্রথম চ্যাম্পিয়ন লীগ খেলায় মাঠে নামে। যখন মেসি মাঠে নামে তখন তাকে দাড়িয়ে অভ্যর্থনা জানা ক্যাম্প ন্যু এর দর্শকরা। মেসি ১৭ টি ম্যাচে ৬টি গোল করেছেন লা লিগায়, ৬টি ম্যাচে ১টি গোল করেছেন চাম্পিয়ান লীগে। মেসি চেলসির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন লীগের ২০০৬ সালের ৭ই মার্চে দ্বিতীয় পর্বের লীগের খেলায় মেসির ডান দিকের উরুর পেশি ছিড়ে যায়। যার ফলে তাকে সেই মৌসুমের ইতি টানতে হয়। বার্সালোনা স্পেন এবং ইউরো চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ওই মৌসুমে রাইকার্ডের অধীনে তাদের মৌসুম শেষ করে।
২০০৪ সালে আর্জেনটাইন ;স্পেনীয় নাগরিক হিসেবে মেসিকে আমন্ত্রণ জানানো হয় স্পেনের অনুর্ধ্ব ২০ ফুটবল খেলার জন্য। এই প্রস্তাব মেসি প্রত্যাখ্যান করেননি। আর্জেনটিনার অনুর্ধ্ব ২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামেন ২০০৪ সালের জুন মাসে। দক্ষিন আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশীপে ২০০৫ আর্জেনটিনার দলের হয়ে খেলেন তখন আর্জেনটিনা সেখানে তৃতীয় হয়। ফিফা ২০০৫ যুব চ্যাম্পিয়নশীপে মেসি ৬টি গোল করেন এবং আর্জেনটিনা চ্যাম্পিয়ন হয়। মেসি ৬ গোল করায় সে গোল্ডেন বল ও গোল্ডেন বুটের পুরষ্কারে ভূষিত হয় এবং প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত হয়।
মেসির জীবন কাহিনী ভিডিওঃ
প্রিয় পাঠক, ফুটবলার মেসির জীবন কাহিনী জেনে কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। লাভ ইউ মেসি।