Bangla Pdf Book Download
আমি মৃণালিনী নই Pdf Download
Hello সুপ্রিয় বন্ধুরা ,আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আপনাদের জন্য আপনাদের পছন্দের একটি আকর্ষনীয় বই নিয়ে হাজির হয়েছি ।পাঠকপ্রিয় বন্ধুদের জন্য রয়েছে একটি খুবই চমৎকার অঙ্গার উৎপল দত্ত বইটির সম্পূর্ণ রিভিউ ও [Pdf Download link]। তাই আপনারা আর দেরি না করেই বইটি অতি দ্রুত ডাউনলোড করে ফেলুন 🌹🌹।
Table of Contents
বইয়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
বন্ধুরা, আমি মৃণালিনী নই আমাদের সাইট হতে ডাউনলোড করুুুন।
প্রকাশনী : নোটবুক প্রকাশ
মূল্য : ৩২০৳
book | আমি মৃণালিনী নই |
writter | হরিশংকর জলদাস |
Edition | ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ |
Number of Pages | 150+ |
Country | বাংলাদেশ (Bangladesh) |
format | PDF ডাউনলোড |
বইয়ের সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ
বাস্তব চরিত্রদের নিয়ে, কল্পনা এবং সত্যতার মিশেলে লেখা বই আমার কাছে বরাবরই বেশি আকর্ষণীয়। আমি মৃণালিনী নই- উপন্যাসের কতটা সত্য, কতটা কল্পনা তা বোঝা আমার পক্ষে সম্পূর্ণরূপে সম্ভব না হলেও, লেখক যা লিখেছেন তার প্রকৃতস্বরূপ বুঝতে কোনো সমস্যা হয়নি। “আমি মৃণালিনী নই” বইটিতে হরিশংকর জলদাস খুব সাবলীলভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর জীবন কাহিনি তুলে ধরেছেন মৃণালিনী দেবীর নিজ বয়ানে।
বইটি পড়ার সময় মনে হচ্ছিল, কোনো উপন্যাস পড়ছি না। সাধারণ বধূ মৃণালিনী দেবী সম্মুখে বসে তার মুখে জীবনের দুঃখ-ভরা কাহিনী বলছেন। লেখক যশোরের ভবতারিণী থেকে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে মৃণালিনী হয়ে যাওয়া অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের সাথে বিয়ের দিন থেকে নিজের মৃত্যুর আগ পর্যন্তকালের ঘটনা তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসটিতে। বিয়ের পর রবিঠাকুর ভবতারিণী থেকে তার নাম মৃণালিনীতে পালটে দেন। এই দুঃখ সেই নয় বছর বয়স থেকে শুরু করে তার জীবনের শেষ পর্যন্ত ছিল। কারণ এটা শুধু ভবতারিণীর নাম ছিল না, এই নাম তার স্বত্তারও বাহন ছিল। এই উপন্যাসে তুলে ধরা হয়েছে ঠাকুর বাড়ির তৎকালীন নারীদের অবস্থা, ঠাকুর পরিবারের অন্দরমহলের কড়াকড়ি নিয়ম, এছাড়া রবি ঠাকুর এর সাথে তার নতুন বউঠান কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক, কাদম্বরী দেবীর রহস্যময় ভাবে আত্মহত্যা। উপন্যাসটি শেষ হয়েছে মৃণালিনী দেবীর অন্তিমকালে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মৃণালিনী দেবীর মন অভিমানে পূর্ণ ছিল। এতটা সংসারের জন্য করেও তিনি তার কাঙ্ক্ষিত সম্মান, ভালোবাসা, গ্রহণযোগ্যতা কোনোটাই রবীন্দ্রনাথের কাছে পাননি। রবীন্দ্রনাথ এর মনের একটা কোণও তিনি দখল করতে পারেননি। সেখানে নতুন বৌঠান, ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা এবং প্রকৃতিরই সম্পূর্ণ আধিপত্য ছিল। তিনি রবি ঠাকুর এর অবজ্ঞার শিকার হয়েছেন বহুবার।
সুযোগ বুঝে দুই এক কথা প্রতুত্তরও দিয়েছেন তারপরও করে ফেলা অপমানের আঘাত তার কমেনি। রবীন্দ্রনাথের সহধর্মিণী সবসময় বলতে চেয়েছেন, “আমি মৃণালিনী নই, আমি ভবতারিণী। রবিবাবুর স্ত্রী ছাড়াও আমার নিজস্ব একটা সত্তা আছে, সেই সত্তার প্রতি তিনি কখনো সুবিচার করেননি।’’ এই উপন্যাস পড়ার সময় রবীন্দ্রনাথের আত্মকেন্দ্রিকতা, সংসারের চাইতে বাইরের দিকে,লেখার দিকে মনোনিবেশ, স্ত্রীকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, যেন মৃণালিনী দেবীর সাথে আমাদেরকে আরও বেশি একাত্ম করে ফেলে। হরিশংকর জলদাসের লেখনী-নৈপুণ্যে এই উপন্যাস হয়ে উঠেছে এক নারীর ব্যক্তিসত্তার হাহাকারপূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত।
যে নারী নিজের জীবনের সবটুকু আনন্দ, শ্রম ত্যাগ করেছেন সংসারের জন্য অথচ বিনিময়ে তেমন কিছু না পেয়েও রবীন্দ্রনাথের কাছে নিজের আত্মসম্মানবোধের রক্ষা করে গিয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় তার সব গহনা বেঁচে দিয়ে তিনি একাধারে যেমন বলেন্দ্রের স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন তেমনই তিনিও যে কিছু একটা করতে পারেন তার পরিচয় দিয়েছিলেন। আমাদের চারপাশে এমন অনেক মহান চরিত্র থাকে যারা সম্মানের একদম উচ্চস্থানে অধিষ্ঠিত হোন কিন্তু তাদের নিকটে গেলে দেখা যায় সেই উচ্চস্থানে পৌঁছানোর জন্য কী পরিমান বঞ্চনা এবং ত্যাগের শিকার হতে হয় তাদের কাছের মানুষদের। হাজার, হাজার ন্যায়-অন্যায়ের বুলি বলে বেড়ানো লোকগুলো কী নিদারুণ নিষ্ঠুরভাবে তাদের অধিকারীদেরকে বঞ্চিত করে যান! সমাজ সংস্কার, সাহিত্যে তাদের অবদান থাকে বলে, খালি চোখে সেসব ঢাকা পড়ে যায় সাধারণ মানুষের কাছে। তাদের আচরণ এবং কথাবার্তার মাঝে আকাশ-পাতাল তফাৎ থাকে। আসলে একটা মানুষ যখন ভাগ ভাগ হয়ে যান সর্বসাধারণের মধ্যে তখন চাইলেও তাকে ছোট গণ্ডিতে আটকানো সম্ভব হয় না। সে সবার হয়ে যায়, নিজের মানুষের গুরুত্ব তার কাছে তুচ্ছ হয়ে যায়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এমন মানুষের কাছাকাছি থাকা অনেক বড় যন্ত্রণা, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের বেলায় যার সবটুকু একা বরণ করে নিয়েছিলেন এই উপন্যাসের বক্তা মৃণালিনী, অন্তত আমার কাছে যিনি ভবতারিণী।