সড়ক দূর্ঘটনা অনুচ্ছেদ রচনা
রচনার নামঃ সড়ক দূর্ঘটনা
আমাদের দেশে প্রতিনিয়তই সড়ক দূর্ঘটনা বেড়েই চলছে। এরই পরিপেক্ষিতে এই রচনাটি।
সড়ক দুর্ঘটনা
আমাদের দেশের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা একটি মারাত্মক সমস্যা । দিন দিন এ সমস্যা বেড়েই চলছে। এমন কোনাে দিন নেই, যেদিন সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে না। ঘর থেকে বের হয়ে সড়ক দুর্ঘটনা এড়িয়ে পুনরায় আমরা ঘরে ফিরতে পারব, এ নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। অথচ সড়ক দুর্ঘটনা সকলের নিকটই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ যে শুধু মারা যায়, তা-ই নয় বরং অনেক মানুষ বিকলাঙ্গ হয়ে ইহ জীবনেই নরক যন্ত্রণা ভােগ করতে থাকে। তাদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই পাতায় যে খবরটি দেখে আঁতকে উঠি তা হলাে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ । বহু দুর্ঘটনার খবর কাগজেই আসে না। কত কচি, তাজা প্রাণ, কত তরুণ চিকিৎসক, প্রকৌশলী, মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক, আইনজীবী ও বুদ্ধিজীবীসহ এ দেশের কত জানা অজানা মানুষের প্রাণ সড়ক দুর্ঘটনায় ঘাতক যান কেড়ে নিয়েছে তার কোনাে ইয়ত্তা নেই। সড়ক দুর্ঘটনার বহুবিধ কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে প্রধান কারণ হলাে অদক্ষওপ্রশিক্ষণ-বিহীন গাড়িচালকের বেপরােয়া গাড়ি চালনা। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে তাদের যেমন অজ্ঞতা রয়েছে তেমনি আইন মেনে না চলার প্রবণতাও রয়েছে যথেষ্ঠ। অন্যদিকে গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি এবং এসব ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি রাস্তায় চালাতে দেওয়াও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তাছাড়া ট্রাফিক আইন কড়াকড়িভাবে প্রবর্তিত হতেও দেখা যায় না। ফলে সড়ক দুর্ঘটনাকে গাড়ি চালকেরা অত গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। রাস্তার সংকীর্ণতা, খারাপ অবস্থা, জরাজীর্ণ সেতু, পথচারীদের সড়ক পথে চলাচল সম্পর্কে অজ্ঞতা ও ঔদাসীন্য ইত্যাদিও সড়ক দুর্ঘটনার কারণ। অনেক সময় রাস্তাঘাটে, হাট-বাজার বসার কারণে দ্রুতগামী ট্রাক, বাসের নিচে পিষ্ট হয়ে মারা যায় নিরীহ মানুষ । সড়ক দুর্ঘটনা রােধ করতে হলে কতকগুলাে বিষয় বিবেচনা করতে হবে। প্রথমত, যানবাহন আইন কঠোরভাবে প্রয়ােগ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তি বিধানের জন্য বর্তমানে প্রচলিত আইনের সংস্কার করে কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আইন প্রয়ােগকারী সংস্থাকে নিষ্ঠাবান ও কঠোর হতে হবে। তৃতীয়ত, ট্রাক, বাস, মিনিবাস ও অন্যান্য যানবাহ চালককে স্বল্পকালীন প্রয়ােজনীয় প্রশিক্ষণের ও শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের যথােপযুক্ত পারিশ্রমিক, ছুটি, বিশ্রাম ও বিনােদনের সুযােগ থাকতে হবে। চতুর্থত, জনগণকেও সড়ক পথে চলাচল সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। পঞ্চমত, দুর্ঘটনাকারী গাড়ি ও গাড়ি চালকের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে । ষষ্ঠত, রাস্তায় গাড়ি চলাচল করার আগে ভালাে করে সবকিছু পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সপ্তমত, জনগণের বহুল ব্যবহৃত সড়ক ক্রসিংগুলােতে স্পীড ব্রেকার বা গতি
নিরােধক তৈরি করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা পৃথিবীর সব দেশেই কিছু না কিছু ঘটে। তাই বলে আমাদের দেশের মতাে প্রতিদিনের ঘটনা নয় এটা এবং অসংখ্য মানুষের তাজা প্রাণ এভাবে মুছে যায় না কোথাও। তাই এ সড়ক দুর্ঘটনা রােধকল্পে সরকারকে যেমন কঠোর ও অনমনীয় হতে হবে, তেমনি জনগণকেও সচেতন হতে হবে
One Comment