জীবনীরচনা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী বংলা রচনা [+PDF]

হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আপনাদের জন্য  বঙ্গবন্ধুর  শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী রচনা ও Pdf লিংক নিয়ে হাজির হয়েছি। নিচে লিংক দেওয়া আছে তাড়াতাড়ি ডাউনলোড করে ফেলুন।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও বাংলা রচনা +PDF

সূচনাঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অনন্য সাধারণ নাম। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেতাদের অন্যতম। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দীর্ঘ-আন্দোলন সংগ্রামের পথ বেয়ে ১৯৭১ সালে ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে আমাদের মহান স্বাধীনতা। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা। বাংলাদেশ নামক আমাদের এই স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্রের স্থপতি।

জন্ম : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বর্তমান গােপালগঞ্জ জেলার নিভৃত পল্লির টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মধুমতি নদীর তীরবর্তী ছায়া ঢাকা এই গ্রামে পিতামাতার কোল আলােকিত করে যে শিশুর জন্ম হলাে, তাকে তার জনক- জননী ‘খােকা’ নামে ডাকতে শুরু করলেন এবং প্রকৃত পুরাে নাম রাখলেন ‘শেখ মুজিবুর রহমান।

বংশ পরিচয়ঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম যে পরিবারে তা শেখ পরিবার হিসেবেই সমগ্র অঞ্চলে পরিচিত ছিল। টুঙ্গিপাড়ায়
শেখ পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা হলেন শেখ বােরহান উদ্দিন। তাঁর পূর্বপুরুষ শেখ আউয়াল ছিলেন শেখ মুজিবের অষ্টম পূর্বপুরুষ । জানা যায়, তিনি হযরত বায়েজিদ বােস্তামী (রা.) সঙ্গী বা শিষ্য হিসেবে ইরাক থেকে ভারতবর্ষে আসেন। তাঁর পুত্র শেখ জহীর উদ্দিন কলকাতায় সপরিবারে বসবাস করতেন। তিনি আড়তদারি ব্যবসায় করতেন বলে জানা যায় । শেখ জহীর উদ্দিনের পুত্র শেখ জান মাহমুদ। তাঁর পুত্র শেখ বােরহান উদ্দিন। শেখ বােরহান উদ্দিন ব্যবসায়ের কাজে এক সময় কলকাতা থেকে মধুমতি নদী তীরের
গিমাডাঙা ও ঘােপেরডাঙায় আসেন এবং কলকাতায় আর ফিরে যাননি। তিনি টুঙ্গিপাড়ার কাজী পরিবারে বিয়ে করেন এবং টুঙ্গিপাড়াতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। শেখ বােরহান উদ্দিনের দৌহিত্র শেখ আবদুল হামিদ হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দাদা । বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম শেখ লুত্যর রহমান এবং মায়ের নাম সায়রা বেগম। তারা ছিলেন চাচাতো ভাইবােন। শেখ লুৎফর রহমান পেশাগত জীবনে ছিলেন দেওয়ানী আদালতের একজন সেরেস্তাদার ।

শিক্ষা জীবনঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখাপড়া শুরু স্বগৃহে । অতঃপর ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে গিমাডাঙা প্রাথমিকবিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ছাত্র জীবনের সূচনা হয়। তারপর গােপালগঞ্জে সীতানাথ একাডেমী এবং পরে পিতার কর্মস্থল মাদারীপুর এনে মাদারীপুর ইসলামিয়া হাই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। এ সময় মাত্র বারাে বছর বয়সে তিনি বেরিবেরি রােগে আক্রান্ত হন এবং তার চোখ প্রায় অন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চোখের অপারেশন হয় এবং এরপর প্রায় তিন বছর তার পড়ালেখা বন্ধ থাকে। এই সময় থেকেই তিনি চোখে চশমা পরতে শুরু করেন, যা অব্যাহত ছিল আজীবন । এ সময় তার গৃহশিক্ষক ছিলেন ব্রিটিশ বিরােধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী আবদুল হামিদ মাস্টার। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়ার পেছনে মাস্টার সাহেবের প্রভাব ছিল বলে মনে করা হয় । চোখের অসুখে আক্রান্ত হওয়ায় বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা জীবন প্রায় চার বছর ব্যাহত হয়। অতঃপর ১৯৩৭ সালে তিনি ভর্তি হন গােপালগঞ্জ    মিশন হাই স্কুলে এবং এখান থেকেই ১৯৪২ সালে তিনি এন্ট্রান্স (প্রবেশিকা) পরীক্ষা পাস করেন একটু বেশি বয়সে। স্কুলের ছাত্রাবস্থায়ই শেখ মুজিব বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে এবং বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন এবং একাধিকবার গ্রেপ্তার হন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন স্কুল পরিদর্শন করতে আসা সেকালের দুজন দেশ বিখ্যাত নেতা এবং মন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দীর পথ রােধ করে দাড়িয়ে সঙ্গীসহ শেখ মুজিবুর রহমান দাবি আদায়ে সক্ষম হন এবং প্রখ্যাত এই দুই নেতার নজর কাড়েন ভবিষ্যতে সম্ভাবনাময় দেশনেতা শেখ মুজিব । পরবর্তী শিক্ষাজীবন তিনি শুরু করেন
কলকাতা মহানগরে। ১৯৪৭ সালে তিনি বিএ পাস করেন কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ
কলেজ) থেকে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং কারাবরণ
করেন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ধর্মঘটকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করায় এবং জরিমানা দিতে অস্বীকার করায় কর্তৃপক্ষ তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেন। শেখ মুজিবের শিক্ষা জীবন এভাবেই অসমাপ্ত থেকে যায় ।

আরও পড়ুন:- বিদ্রোহি কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী রচনা +Pdf (সকল তথ্য জানুন)

রাজনৈতিক জীবনঃ বকলকাতায় থাকা অবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। ইসলামিয়া কলেজের ছাত্রাবাস বেকার হােস্টেলে অবস্থানকালে শেখ মুজিব তকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দীসহ প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতা শেরে বাংলা, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মাওলানা ভাসানী প্রমুখের সাহচর্যে এসেছিলেন। ১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের সময় তিনি কারাবন্দি থাকা অবস্থায় সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তাকে আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রাদেশিক সরকারের কৃষি ও বনমন্ত্রী হিসেবে মনােনীত হন। পরবর্তীকালে আওয়ামী মুসলিম লীগ হতে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা এক অধ্যাদেশ বলে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করে দেশে মার্শাল ল জারি করেন এবং প্রধান সেনাপতি জেনারেল আইয়ুব খানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত করা হয় ।কিছুদিন  পরই আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। শেখ মুজিবসহ অপরাপর নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার করে
তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা করা হয়। কিন্তু মামলায় শেখ মুজিবুর রহমান নির্দোষ প্রমাণিত হলে ১৯৫৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। জেল-জুলুম সত্ত্বেও শেখ মুজিব দমে যাননি। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের শােষণ ও স্বৈরাচারী শাসন থেকে পূর্ব পাকিস্তানের অসহায় জনগণকে রক্ষার জন্য দেশব্যাপী আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন। ফলে ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁকে ষড়যন্ত্র মামলায় দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে জেলে পাঠানাে হয় । কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে শেখ মুজিব জামিন লাভ করেন। অতঃপর ১০ ফেব্রুয়ারি লাহােরে শেখ মুজিব পূর্ব বাংলার
জনগণের মুক্তির সনদ ৬ দফা ঘােষণা করেন। এতে পাকিস্তান সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে একটি মিথ্যা মামলা সাজিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে কারারুদ্ধ করে। ফলে পূর্ব বাংলার ছাত্র-জনতার তীব্র ও রক্তাক্ত আন্দোলন- সংগ্রাম যা পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। সামরিক স্বৈরাচার আইয়ুব খানের পতন ঘটে। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রামপরিষদের উদ্যোগে শেখ মুজিবকে এক বিশাল গণসংবর্ধনা দেওয়া হয় । দশ লক্ষ লােকের ঐ সমাবেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে সভার সভাপতি ডাকসুর ভিপি তােফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। জনতার করতালির মধ্য
দিয়ে শেখ মুজিব পরিণত হলেন বাংলার বন্ধু বঙ্গবন্ধু’তে এবং বঙ্গবন্ধু বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন।

 সত্তরের নির্বাচন ও স্বাধীনতা ঘােষণাঃ নতুন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের মধ্যস্থতায় ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরে পাকিস্তানি সামরিক সরকার টালবাহানা শুরু করে। শুরু হয় নতুন করে ষড়যন্ত্র । বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা দেশব্যাপী গণজোয়ার যা গণআন্দোলনে রূপ নেয় । শ্লোগান ওঠে তােমার নেতা আমার নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব । আর নয় স্বাধিকার, এবার চাই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে উত্তাল
জনতার রক্তে রক্তাক্ত হতে থাকে বাংলার রাজপথ, শ্যামল প্রান্তর। এমনি বাস্তবতায় ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে আহুত এক বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন-“প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলুন এবং আমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব । এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ‎ইনশাআল্লাহ। । এবাবের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” অতঃপর ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ঘুমন্ত ঢাকাবাসীর উপর বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পৈচাশিকআক্রমণ, নারকীয় হত্যাকাণ্ড, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার এবং গ্রেপ্তারের পূর্ব মুহূর্তে ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতার ঘােষণা : “This is the
last message. From today Bangladesh is independent.” পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়ারলেসের মাধ্যমে ঘােষিত ও প্রেরিত
স্বাধীনতার ঘােষণায় বঙ্গবন্ধু দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “পাকিস্তানি আর্মিকে বাংলার মাটি
থৈকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবে।” মৃত্যুকে তুচ্ছত্যাগ করে দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করতে বাঙালি আর্মি, পুলিশ, ইপিআর, আনসারসহ লক্ষ লক্ষ ছাত্র-যুবক-তরুণেরা অস্ত্র আর ট্রেনিং-এর জন্য পাড়ি জমায় ঐতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারতে। ভারত সরকারের সহায়তায় স্বল্প সময়ের মধ্যেই অস্ত্র আর ট্রেনিং নিয়ে এসব বীর সন্তানেরা ঝাপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে এবং মাত্র নয় মাসের মধ্যে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য, রক্ত লাল পতাকা।

জাতির জনক উপাধিঃ ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ছাত্র লীগ আয়ােজিত পল্টনের বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীন
বাংলার জাতির পিতা হিসেবে প্রথম অভিহিত করা হয় এবং স্বাধীনতার পর সরকার তাঁকে জাতির জনক হিসেবে ঘােষণা করে ।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও শাসন ক্ষমতা গ্রহণঃ একাত্তরের পঁচিশে মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে আটকে
রাখলেও মুক্তিযােদ্ধাদের চোখের সামনে যেন জ্বলজ্বল করত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। তাই তাঁরা যুদ্ধে একেকটি বিজয়ের পর স্লোগান দিত
“আমার নেতা তােমার নেতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং জয় বাংলা। স্বাধীনতার পর ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বাঙালির প্রাণপ্রিয় নেতা বীরের মতাে প্রত্যাবর্তন করেন স্বদেশের মাটিতে। সেদিনও লক্ষ লক্ষ জনতা তাকে আনন্দাশ্রু দিয়ে স্বাগত জানায় স্বাধীন বাংলার রক্তাক্ত মাটিতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দেশ পরিচালনা করতে পেরেছেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তােলার জন্য যখন রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই তিনি প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি নানা যড়যন্ত্র ও প্রতিকূলতার
মুখোমুখি হচ্ছিলেন। হত্যা, সন্ত্রাস, লুটতরাজ আর অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশে একটি বিরূপ পরিবেশের সৃষ্টি করা হচ্ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যখন এসব বিরুদ্ধ শক্তিকে প্রতিরােধ করে দেশকে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পনাসহ প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক তখনই দেশি-বিদেশি স্বাধীনতা বিরােধী চক্রের ষড়যন্ত্রে কতিপয় বিভ্রান্ত ও কুলাঙ্গার সেনা কর্মকর্তাদের দ্বারা নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভােররাতে। বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষকে যেমন গভীরভাবে ভালােবাসতেন তেমনি বিশ্বাসও করতেন। আর এ বিশ্বাসই হলাে তার জীবনের কাল।

আরও পড়ুন:– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী রচনা +Pdf

উপসংহারঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও সৎ। তিনি জীবনের শুরু থেকে বাঙালি ও বাংলাদেশকে ভালােবেসেছেন গভীরভাবে। আর তাই সারা জীবন অন্যায়, অত্যাচার আর শাসন-শােষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেগেছেন জীবন বাজি রেখে । ফলে তার জীবনে অসংখ্যবার তিনি জেলে গেছেন, জেলে কাটিয়েছেন জীবনের একটি বড় সময়। তবুতিনি অবিচল থেকেছেন বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার সংকল্পে। তাইতাে বাঙালি জাতি তাকে দিয়েছে হাজার বছরেরশ্রেষ্ঠ বাঙালির উপাধি দিয়েছে জাতির জনক ও বঙ্গবন্ধু উপাধি। বঙ্গবন্ধু অনন্তকাল থাকবেন বাংলার মানুষের হৃদয়ে অমরত্নের আসনে।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা pdf 👎👎download link

Download

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button