হেলথ টিপস

ব্যায়ামের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

 হ্যালো বন্ধুরা,আশা করি সবাই ভালো আছেন। এখন আমরা জানব ব্যায়ামের বিশেষ কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

আমরা সবাই নিজেকে ফিট রাখতে চাই।এই ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য অনেকে অনেক কিছু করছেন।শারীরিক কিছু ক্রিয়াকর্ম মানেই ব্যায়াম,যা আমাদের মানসিক সক্ষমতাকে বাড়াতে কিংবা কখনো কখনো স্বভাবিক রাখতে সহায়তা করে। সাধারণত মানুষের পেশির কর্মক্ষমকে বাড়াতে, অতিরিক্ত ওজন কমাতে, রক্তসংবহন তন্ত্রের ক্রিয়াকর্ম স্বাভাবিক রাখতে, শারীরিক কসরতপূর্ণ খেলায় অধিক দক্ষতা আনায়নকল্পে, দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে, অস্থির দৃঢ়তা রক্ষায়,কখনো বা এটি বিনোদনের অংশ হিসেবে ব্যায়ামের জুড়ি নেই । এখন আপনাদের জানাবো ব্যায়াম করার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে—

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাডায়ঃ

অস্থির ক্ষয়জনিত রোগ কিংবা হূদরোগ , অস্টিওপরোসিস রোগ প্রতিরোধে কি আপনারা আশাবাদী! তাহলে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাবার একমাত্র চাবিকাঠি হচ্ছে ব্যায়াম । তাই পরিমিতও নিয়মিত শারীরিক ব্যায়ামের ফলে রক্তচাপকে কমিয়ে রাখেতে সাহায্য করে এবং উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে। রক্তের মধ্যে মাববদেহের জন্য ক্ষতিকর চর্বিজাতীয় পদার্থ ট্রাইগ্লাইসেরইড ও হলো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে মানবদেহের জন্য উপকারী হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন নামক কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে রাখে। । এই দুই ক্রিয়ার মিলিত প্রভাব প্রতিরোধ করে মানুষের রক্তনালির প্রাচীরে চর্বি অবাঞ্ছিত জমাটবদ্ধতাজনিত সমস্যা এথেরোমা তৈরি হওয়া থেকে । এটি মানব রক্তনালি দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন ও সুষম রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করে। এ ছাড়াও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ডায়াবেটিস, অস্টিওপরোসিস, স্তন ক্যান্সার, অন্ত্রের ক্যান্সারসহ আরো নানা প্রকার মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

আরও দেখুন:- ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন।

দেহের সঠিক ওজন নিশ্চিত করেঃ

আপনি কি আপনার শরীরের বাড়তি ওজন ও মেদ-ভুঁড়ি কমাতে চান। তবে অবসর সময়টা ব্যয় করুন আপনার ব্যায়ামের জন্য । শুধু ব্যায়ামই বা কেন যেকোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম মানেই তো অতিরিক্ত ক্যালরি বা শক্তিক্ষয় হওয়া । যেটির শেষ পরিণতিটা হচ্ছে ওজন হ্রাস/ কমানো। কাজের গতি যত গতিশীল ওজনও তত দ্রুত হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । তবে এটার বিনিময়ে হতে পারে দেহের সঠিকওজন নিয়ন্ত্রণ। এটার জন্য কোনো ব্যায়ামাগারে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, এমন বিশেষ কোনো নিয়ম নেই । তবে বহুতলা ভবনে ওঠার জন্য লিফট ব্যবহার না করে নিয়মিত সিঁড়ি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। দুপুরের বিরতিতে ঘুমানোট পরিবর্তে কিছুটা সময় ব্যবহার করুন হাঁটাহাটির কাজে । কোনে কাজ কুলি-মজুরেরকে দিয়ে করানোর পরিবর্তে নিজে করুন। আপনার বাড়তি ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি এসব ছোট ছোট কাজই আপনাকে সাহায্য করবে।

দেহ হয়ে উঠবে নতুনভাবে শক্তিশালীঃ

প্রতিদিন মুদি দোকানে কেনাকাটায় কিংবা গৃহস্থালি টুকিটাকি কাজে বিরক্ত হলেও হতাশ হবেন না। তবে প্রতিদিন পরিমিত ব্যায়ামের ফলে আপনার দেহ নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পাবে। নতুন শক্তিতে দেহ বলীয়ান হয়ে উঠবে । আপনি ফেলতে পারবেন একদম স্বস্তির নিঃশ্বাস। নতুন উদ্যমেই খেলা করতে পারবে আপনার দেহ ও মন। আপনার দেহের সমগ্র কোষকলার স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক অক্সিজেন ও পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করবে পরিমিত প্রতিদিনকার ব্যায়াম। সমগ্র রক্ত সংবহন তন্ত্র সহ হৃৎপিণ্ড হয়ে উঠবে আরো অধিক শক্তিশালী ও ক্রিয়াশীল। নতুন মাত্রা যুক্ত শ্বাসতন্ত্রের কাজে । এর ফলে এই দুইটা তন্ত্রের আরো অধিক কার্যকারিতা আরো অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে আপনার কাজের উৎসাহ এর মাত্রাকেও ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ

আমরা অনেকেই ইতোমধ্যে জানি যে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাঁটাহাঁটি করলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। যারা বেশ কিছু সময় ধরে ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের তো উচিৎ খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিয়ম করে সকালবেলায় ও বিকালনেলায় ব্যায়ামে করার জন্য বাহিরে বের হওয়া। প্রত্যেকদিন ৩০ মিনিট করে সকালে ও বিকালে নিয়মিত ও পরিমিত জগিং বা অন্য যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করতে পারলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । যাদের এখনো পর্যন্ত ডায়বেটিস নাই তাদের ও উচিৎ প্রতিদিন কম করে হলেও সকাল ও বিকালবলায় ২০ -৩০ মিনিট করে হাঁটাহাটি করা দরকার। এতে করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে

হাড়ের গঠনকে মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলেঃ

ব্যায়াম যতগুলো উপকারিতা আছে তার মধ্যে সবচোইতে কার্যকরী এবং খুব দ্রুত যে ফল পাওয়া যায় তা হচ্ছে, হাড়ের সঠিক গঠন। হাড়ের গঠনকে আরো বশি পরিমাণে বৃদ্ধি করতে এবং আরও শক্তিশালি করতে এটা অনেক গুরুত্বপূর্ন পরিমাণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার ফলে এটি হাড়ের গঠনকে অনেক ভালো রাখে , পেশীও সুস্থ থাকে এবং আরও বেশি শক্তিশালি হয়ে উঠে । এটি বিশেষভাবে পায়ের হাড়কে স্ট্রং/ মজবুত রাখতে অনেক ভূমিকাও রাখে।

উদ্দীপিত হবে লুপ্তপ্রায় যৌন জীবনঃ

আপনি আপনার মোটাসোটা থলথলে দেহকে অপরের অন্তরঙ্গ সান্নিধ্যে আসার প্রধান বাধা হিসেবেই কি মনে করেন ? তাহলে ব্যায়াম হতে পারো আপনার এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য শেষ ভরসাটুকু । কেননা দৈনিক নিয়মিতও পরিমিত ব্যায়ামের ফলে আপনার দেহের অতিরিক্ত ওজন কমার পাশাপাশি আপনি হয়ে উঠবেন আরো সুঠাম ও সুগঠিত আরো যৌন আবেদনময়ী যা আপনার যৌনশক্তিকে আরো বাড়িয়ে তুলবে এবং কি আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাবও ফেলবে। একটি গবেষণায় দেখা যায় যে , মহিলাদের যৌন উত্তেজনার সাড়া প্রদান বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম। একইসঙ্গে দূর করে দেয় পুরুষদের যৌন উত্তেজনার সময়ও পুরুষাঙ্গের নিস্জেত হওয়ার নানা সমস্যা যেটি “ইরেকটাইল ডিসফাংশন নামেও বেশ পরিচিত”। তবে চির যৌবন প্রাপ্তির এক গুরুত্বপূর্ণ মহৌষধ হচ্ছে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা।

ঘুম বাড়ায়ঃ

আপনি কি প্রতিনিয়ত ঘুম যওয়ার জন যুদ্ধ করে যাচ্ছেন অথবা নিদ্রাবিহীন রাএি যাপন করতেছেন।তাহলে আপনি প্রতেকদিন সকাল অথবা বিকেলের দিকে নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম করতে পারেন এতে করে নিদ্রা অনেক ভালো হবে । পরিমিতও নিয়মিত ব্যায়ামের করার ফলে আপনার দুচো খজুড়েই আসবে স্বপ্নের রাজ্যের সেই ঘুম। একই সঙ্গে বদ্ধি পাবে আপনার ঘুমের গাভীরতা। যদিও রাতে বিছানায় যাওয়ার ঘণ্টা দুই এক আগে অতিরিক্ত ব্যায়াম উচিৎ নয় এতে করে চোখে ঘুম আসতে অনেক অসুবিধা হয়। তবে যদি আপনি নিদ্রাহীনতায় ভুগেতে থাকেন তাহলে আপনাকে প্রত্যেকদিন সকালে সকালে কিংবা বিকেলে বেলায় পরিমিত ব্যায়াম করার কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে একটা রাতের ঠিকমত ঘুম আপনার কাজের একাগ্রতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে ও উৎপাদনশীলতাও । দেহে ও মনে নতুনভাবে জেগে উঠে আসবে আনন্দের ভাব।

বিষণ্নতা কাটিয়ে তোলেঃ

আপনি কি নিজের মন থেকে নিজেকে বের করে দিতে চাচ্ছেন প্রতিদিনের নানান ধরনের শারীরিক ও মানসিক চাপের সৃষ্ট কিছু বিষণ্নতা। এর জন্য প্রতিদিন ৩০ মিনিটের দ্রুত হাঁটাহাটি নয়তো ব্যয়ামাগারে/জীমে ৩০ মিনিট সময়ের ব্যায়াম আপনাকে ভূলিয়ে দিবেবিষন্মতা এবং দিতে পারে কিছুটা হলেও শান্তির ছোঁয়া ।আপনার মস্তিষ্ককে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণে উদ্দীপিত করেতে সাহায্য করে নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম। মস্তিষ্ক কর্তৃক নিঃসৃত এসব রাসায়নিক পরবর্তীতে আপনাকে করে তুলবে আরো কর্মক্ষম ও অনেক সুখী । বাড়িয়ে তুলবে নিজের আত্মবিশ্বাস লেভেল । নিয়মিত ও পরিমিত শরীরিক ব্যায়াম বিষণ্নতা প্রতিরোধে এভাবেই সাহায্য করে।

অবসরে বিনোদন দেওয়াঃ

ছুটির দিন কিংবা অবসরের সময়টা আপনার হয়ে উঠুক শারীরিক পরিশ্রম করার জন্য ।একঘেয়েমি খাটুনিকে কেবল ব্যায়াম বুঝায় না ।কিন্তু সেটা হতে পারে ভিবিন্ন ধরনের বিনোদনের অংশ । যেমন : ভ্রমণের অংশ হিসেবে দুর্গম কোনো জায়গা অতিক্রম, পদব্রজে কোনো গ্রামের কিংবা বুনো পথ ভ্রমণ, উঁচু কোনো পাহাড় কিংবা পর্বতে আরোহণ,কিংবা অবসরে শারীরিক পরিশ্রমসমৃদ্ধ নানান ধরনের খেলা, সাঁতার, ফুটবল,কাবাডি, , দৌড়ঝাঁপ, , গোল্লাছুট ইত্যাদি বিনোদনে করে যেতে পারেন শারীরিক পরিশ্রমের জন্য।

পরিশেষে বলতো চাই শরীরিকভাবে অথবা মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই।এতে করে আপনারা অনেক ভালো থাকবেন।আর অবশ্যই এটি পড়ে ভালো লেগেছে  কিনা কমেন্টে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button