খালি পেটে আদা-পানি পান করার উপকারিতা জানুন
এখন আমরা জানব খালি পেটে আদা-পানি পান করার বিশেষ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
ভিডিও
আদা কে না চিনে, এটি সবার একটি পরিচিত উপকরণ।আদা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। প্রত্যেক দিন সকালবেলায় এক গ্লাস পরিমাণ আদা-পানি পান করলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন। এই আদা-পানীয় তৈরি করার জন্য ১গ্লাস পানি গরম করে ১ টেবিল চা-চামচ আদা কুচি দিন এবং ভালোভাবে মিশ্রিত করুন । পানি যদি একটু ফুটে উঠে তাহলে চুলা একটুখানি কমিয়ে দিন, ১৫ মিনিট এভাবে রাখুন। আদা- পানীর এই মিশ্রনটি চুলা থেকে নামিয়ে ভালোভাবে ঠান্ডা করুন। একটা লেবর অর্ধেক রস ও যদি পারেন ১ চামচ মধু মিশিয়ে পানীয়টি পান করুন।
এখন খালি পেটে আদা-পানি পান করার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব:
কাশি কমায়, কফ দূর করেঃ
এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন দুবেলা যদি খেতে পারেন তাহলে আপনার কাশি নিরাময় হবে এবং কফ দূর হয়ে যাবে।
হাঁপানি ও ফুসফুসে সংক্রমণ রোধেঃ
যদি কারো ফুসফুসের ধমনিতে কোনো ধরনের সংক্রমণ থাকে এবং শ্বাস -প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে বা হাঁপানি জনীত কোনো সমস্যা থাকে তাহলে আপনারা প্রতিদিন দুবেলা করে আদার রস, এক চা–চামচ করে, লেবুর রস, মধু এক কাপ পরিমাণ গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন চায়ের মতো করে খাওয়ার অভ্যাস করুন এতে করে অনেক উপকৃত হবেন।
আরও দেখুন:-সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা।
আমাশয়, পেটফাঁপা, পেটব্যথায়ঃ
যাঁরা এধনের সমস্যায় সবসময় ভুগতেছেন, তাঁদের জন্য প্রতিদিন খাওয়ার পরে এক চা–চামচ আদার রস এবং এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে পেটব্যথা,আমাশয়, পেটফাঁপা দূরীভূত হবে। দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা এ সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা প্রতিদিন এক চা–চামচ পরিমাণ আদার রস, মধু,লেবুর রস এক কাপ গরম পানিতে একঙ্গে মিশিয়ে চায়ের মতো করে দিনে এবং রাতে নিয়মিত খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
মাইগ্রেন, সাইনাস, গলা ও মাথাব্যথায়ঃ
এই ধরনের তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের জন্য সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে কাঁচা আদাকে কুচি কুচি করে চিবিয়ে খেতে হবে। এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু গরম এক কাপ পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন দুবেলা করে খেতে হবে যদি আপনি রোগ সারাতে চান। নিয়ম করে আপনি যদি নিয়মিত পানীয়টি খান তাহলে আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা দূর হবে।
সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে কাঁচা আদা কুচি কুুুচি করে চিবিয়ে খেতে পারলে আহারে রুচি আসে, ক্ষুধা বাড়ায় এবং হজমে ও অনেক সহায়তা করে থাকে।
হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণঃ
হৃদ্রোগের সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপায় আছে। প্রাকৃতিক উপায়ে এই সমস্যা নিরাময় করার জন্য যাঁদের হৃদ্রোগ আছে কিন্তু কোনো উচ্চরক্ত চাপ নেই। তাঁরা প্রতিদিন দুবেলা করে এক চা–চামচ পরিমাণ করে লেবুর রস, আদার রস, ও মধু এক কাপ কুসুম গরম পানিতে মিশ্রিত করে খেতে পারেন,এতে করে আপনার এই ধরনের সমস্যা কমে যাবে। ধৈর্য সহকারে আপনি যদি নিয়মিত এ নিয়ম মেনে চলন তাহলে আপনার হৃদ্রোগের সমস্যা আস্তে আস্তে দূর হতে থাকবে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস,অস্টিওআর্থ্রাইটিস, হাড়ের জয়েন্টের ব্যথাঃ
মূলত এসব রোগগুলোর কোনো নির্দিষ্ট স্থায়ী সমাধান নেই। নির্দিষ্ট ব্যায়াম , শরীরের ওজন ঠিক রেখে ও প্রতিদি দুবেলা করে নিয়মিত এক চা–চামচ পরিমাণ আদার রস, লেবুর রস, মধু এক কাপ কুসুম গরম পানিতে মিশ্রিত করে চায়ের মতো করে খেলে এর তীব্রতা কিছুটা হলে কমে। এই রোগ হওয়ার অন্যতম একটি কারণ শরীরে পানি ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি। তাই পানি পান করার পরিমাণ আগে থেকে বাড়তে হবে।
পাকস্থলী ও লিভারের শক্তিবর্ধকঃ
প্রতিদিন দুবেলা করে এক চা–চামচ পরিমাণ লেবুর রস, আদার রস ও মধু এক কাপ কুসুম গরম পানিতে মিশ্রিত করে চায়ের মতো করে নিয়মিত খেতে পারলে পাকস্থলী ও লিভারের শক্তি আরও অনেক গুন বৃদ্ধি পাবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেঃ
প্রতিদিন সাকালে এবং বিকেলে এক চা–চামচ পরিমাণ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ ককুসুম গরম পানিতে মিশ্রত করে চায়ের মতো করে নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপও অনেক নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। ডায়েবেটিস রোগীদেরকে অবশ্যই মধু বাদ দিয়ে খেতে হবে, তানাহলে তাদের একদিক ভালো হলে আরেকদিক খরাপ হয়ে যাবে।
জ্বর জ্বর, বমি বমি ভাব দূর করেঃ
এক চা–চামচ পরিমাণ আদার রস কুসুম গরম পানিতে মিশিত করে প্রতিদিন ৬-৭ বার খেলে শরীরের জ্বর জ্বর ভাব ও বমি বমি ভাব একদম কেটে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ( National Center For Complementary And INTIGRETIVE) হেলথের দেওয়া একটি তথ্য অনুযায়ী অতিমাত্রায় আদা খাওয়া খেলে আদার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া( Side-effect) হিসেবে বধ হজম বা হজমে সমস্যা ও পেটফোলা ভাব দেখা দিতে পারে । প্রতিদিন ১৫ গ্রামের বেশি আদার রস খাওয়া উচিত নয়।