লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানুন
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সাবাই ভালো আছেন। আজকে আপনাদেরকে জানবো লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
লেবু একটি জনপ্রিয় ফল, এটি আমরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি। এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ভিটামিন সি এর অভাবে শরীরে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের লেবু খাওয়া খুবই দরকার।
Table of Contents
ভিড়িওঃ
nbsp;
এখন আমরা জানবো লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
লেবুর উপকারিতাঃ
লেবু ভিটামিন সি-এর অত্যন্ত ভালো একটি উৎস, এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রেডিক্যাল সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে, যা কোষের ক্ষতি রোধ করে। নিচে লেবু খাওয়ার কয়েকটি সুবিধা আলোচনা করা হলো।
সুসাস্থ ও ত্বকের জন্য লেবু
ভিটামিন-সি ত্বকের কোলাজেন সিস্টেম গঠনে সাহায্য করে। ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। এটি ত্বকের দূষণ রোধ করে, এবং ত্বকের ক্ষতিকারক জীবাণু ধ্বংস করে। লেবু এবং চিনি একসাথে মিশিয়ে ত্বকে হিসেবে ব্যবহার করা যায়
রোগ পতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
লেবুতে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় জ্বর সর্দি কাশির জীবাণুর বিরুদ্ধে দারুন ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন-সি গ্রহণের ক্ষেত্রে সব সময় প্রাকৃতিক উপাদানকে প্রাধান্য দেয়া হয়। প্রাকৃতিক উপাদান যে পরিমাণ সাহায্য করে ভিটামিন সি এর পরিপূরক কিন্তু ততটুকু সাহায্য করতে পারে না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কিন্তু প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। লেবু কিন্তু সচরাচর পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তা তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে লেবুর ভূমিকা অপরিহার্য।
আরও দেখুন:- ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা: খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুন বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।
ওজন কমায়
1. লেবু এমন একটি ফল যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে গরম জলে লেবু খেলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ চর্বি পায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন লেবু খায় তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে
2012 সালের একটি গবেষণায় দেখা যায় , সাইট্রাস ফল ইসকেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। 14 বছরের একটি গবেষণায় 70000 মহিলার উপর দেখা যায়, যারা সবচেয়ে বেশি সাইট্রাস ফল খেয়েছে তাদের ইসকেমিক স্ট্রোকের হার 19 শতাংশ কম ছিল। এটি একটি সাধারণ ধরনের স্ট্রোক। যখন মস্তিষ্কের রক্ত জমাট বেধে যায় এবং রক্তের প্রবাহ কি থামিয়ে দিয়ে তখন এটি হতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে
2014 সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অনিয়মিত হাটাহাটি করে এবং প্রতিদিন লেবু পান পানি করে তাদের রক্তচাপ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই প্রতিদিন বেশি করে হাঁটাহাঁটি করা এবং লেবু পানি পান করা অনেকগুরুত্বপূর্ণ।
হাঁপানি রোধে লেবু
যদি আপনি হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, আপনি যদি চান হাঁপানি যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে আপনি বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য ভিটামিন ও প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। যারা শ্বাসকষ্ট অথবা হাইপারসেনসিটিভিটি তে ভুগছেন তাদের জন্য ভিটামিন-সি একটি কার্যকরী সমাধান।
সংক্ষিপ্ত আকারে লেবু খাওয়ার কিছু উপকারিতা তুলে ধরা হলো
• লেবু ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
• প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস পান করলে শরীরের পিএইচ লেভেল ঠিক থাকে।
• হজম ঠিক রাখতে লেবু অনেক সহায়তা করে।
• ভিটামিন সি এর সাথে লেবুতে ক্যালসিয়াম ম্যাগনেশিয়াম পটাশিয়াম ফসফরাস ইত্যাদি সমৃদ্ধ।
• লেবু সাধারণ সর্দি-কাশি জ্বর ইত্যাদি জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
• ব্রণের দাগ এবং ত্বকের দাগ এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে লেবু পানি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
• প্রতিদিন সকালে কুসুম গরম পানির সাথে লেবু পানি পান করলে শরীরের ওজন এবং মেটাবলিজম ঠিক থেকে।
• লেবু লিভারের বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করতে সাহায্য করে।
• হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস পান করলে শরীরে জয়েন্টের এবং পেশীর ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে।
• গরম পানির সাথে লেবুর রস পান করলে দাঁতের জন্য ভালো এবং দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
লেবুর অপকারিতাঃ
লেবুর রস এসিড সমৃদ্ধ অতিরিক্ত পরিমাণে লেবুর রস পান দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে।
যদিও লেবুপানি অনেক উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত লেবুর রস পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। জেনে নেয়া যাক অতিরিক্ত লেবু পানি পান করার কিছু অসুবিধা। আশা করি এগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।
আরও দেখুন:- অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
দাতের এনামেল ক্ষয় হওয়া
বেশকিছু গবেষণায় দেখা গেছে যারা অতিরিক্ত পরিমাণে লেবুপানি পান করে তাদের দাঁতের এনামেল ও ডেন্টিং ক্ষয় হয়ে যায়। লেবু এসিড সমৃদ্ধ হওয়ায় অন্যান্য কোমল পানীয়র মত অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু পানি পান করলে দাঁতের অনেক ক্ষতি হতে পারে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে বেশ কিছুদিন লেবু পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
ঘন ঘন পস্রাবের সমস্যা হওয়া
মানুষ বিশ্বাস করেন এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস পান করলে বহুমূত্র সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে সঠিকভাবে কোন গবেষণায় এর যুক্তি বের হয়ে আসেনি। যদি আপনার বহুমূত্র সমস্যাটি বিশেষভাবে দেখা দিয়ে থাকে তবে আপনি কিছুদিন লেবু পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। আর এই সমস্যার জন্য আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।
মাইগ্রেনের সমস্যা হওয়া
অনেক মানুষ লেবুর পানি পান করলে তাদের মাইগ্রেনের সমস্যা হতে পারে। আপনার যদি মাইগ্রেনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি লেবু পানি পান করা থেকে বিরত থাকাই ভালো । হয়তোবা এটা আপনার মাইগ্রেনের সমস্যার কারণ হতে পারে আবার আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা ফিরিয়ে আনতে পারে ।
আশা করি এই লেখাটি পড়লে আপনাদের অনেক ভাল লাগবে এবং আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।