গাড়ি চালানোর আগে যা যা জানা জরুরি
বন্ধুরা আমরা এখন জানবো গাড়ি চালানো কিছু করনীয় কাজ সম্পর্কে। আমাদের নিজের কিংবা অন্যের গাড়ি যাই হোক না কেন তা চালনার আগে কিছু কাজ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার খুবই প্রয়োজন হয় । কেননা গাড়ির অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। রাস্তায় চালানোর সময় এমনকি এর কারণে ঘটতে পারে অনেক বিপদজনক দূর্ঘটনা। গাড়ি চালনার পূর্বে একটু সচেতনতায় পারে এই দূর্ঘটনা অনেকাংশে প্রতিরোধ করতে। আসুন জেনে নেওয়া যাক গাড়ি চালনার আগে কিছু করণীয় ।
গাড়ি চালানোর আগে নিম্নে কিছু করণীয় কাজ দেওয়া হলঃ
১. জ্বালানি চেক করে নেওয়াঃ ধরুন আপনি রাস্তায় গাড়ি চালানো সময় স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেছে। এটার কারণ কি দেখলেন যে জ্বালানি নেই। তাই রাস্তায় যাতে এই ধরনের সমস্যায় যেন না পড়তে হয়, সেজন্যে গাড়ি চালানোর আগেই আপনার জ্বালানি ( ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাস) ইত্যাদির আছে কিনা তা পরীক্ষা করা এবং না থাকলে পরিমাণ মতো নিয়ে নেওয়া দরকার ।
2. মবিলের লেবেল ঠিকভাবে দেখাঃ যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মবিল/লুব/ ইঞ্জিন অয়েল না থাকলে ইঞ্জিন ক্ষয় হবে এবং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই গাড়ি চালানোর আগে মবিলের লেবেল ও ঘনত্ব ঠিক আছে কিনা তা ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিতে হবে এবং কম থাকলে তা পরিমাণ মত নিতে হবে।
৩. ব্রেক অয়েলঃ ব্রেক ফেইল হওয়ার সবচেয়ে অন্যতম কারণ হচ্ছে গাডিতে ব্রেক অয়েল না থাকা। এর ফলে ঘটে যেতে পারে অনেক বড় ধরনের বিপদজনক দূর্ঘটনা। এর এজন্য মাস্টার সিলিন্ডারের ব্রেকফ্লুইড, ব্রেকঅয়েল পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার ও কম থাকলে তা নিয়ে নিতে হবে।
৪. চাকা চেক করাঃ যেহেতু গাড়ি চাকার মাধ্যমে চলে সেহেতু গাড়ির চাকা চেক করে নেওয়াটা খুবই প্রয়োজনীয় । টায়ারের কন্ডিশন, হাওয়া, নাট, এলাইমেন্ট, রোটেশন, স্পেয়ার চাকা ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিতে হবে।
৫. ব্যাটারির কানেকশন দেখে নেওয়াঃ যদি ব্যাটারির কানেকশন ঠিক না থাকে তাহলে গাড়ি স্টার্ট হবে না। তাই আগে ব্যাটারির কানেকশনটা পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
৬. পানি আছে কিনা চেক করাঃ সাধারণত গাড়ির দুটি স্থানে পানি(ডিস্ট্রিল ওয়াটার) দিতে হয়। একটি হলো ব্যাটারি আর অন্যটি হলো রেডিয়েটরের । আপনাকে গাড়ি চালানোর পূর্বে অবশ্যই এ দুটির পানি পরীক্ষা করে নিতে হবে , না থাকলে পরিমাণ অনুযায়ী নিয়ে নিতে হবে। কেননা ব্যাটারিতে পানি না থাকলে ব্যাটারি খারাপ হয়ে যাতে পারে অন্যদিকে রেডিয়েটরের পানি না থাকলে ইঞ্জিনবেশি হিট হয়ে নস্ট ট যেতে পারে ।
৭. টেস্টভাবে ড্রাইভ করাঃ আপনার গাড়ির ( ইঞ), লাইটিং সিস্টেম, ব্যাটারি, স্টিয়ারিং ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, নাট-বোল্ট টাইট আছে কি না তা দেখে নেওয়া উচিৎ । গাড়িকে একটু চালিয়ে নিয়ে ব্রেক ও ক্লাসের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে নিতে হবে । অর্থাৎ সার্বিকভাবে মোটরযানটি সসমস্যামুক্ত আছে কি না তা দেখে নিতে হবে।
৮. বিপদের কিছু জিনিস সাথে রাখাঃ কিছু জিনিস আছে যা আপনাকে বিপদে সাহায্য করবে। সেগুলো হলোঃ-
(ক) দলিলপএ সাথে করে রাখাঃ আপনারা কি ভাবছেন এটা জমির দলিলপএ নয়। আপনাকে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্সটোকেন, ইনসিওরেন্স সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুটপারমিট ইত্যাদি কাগজপত্র সবসময় সাথে করে রাখতে হবে। কেননা এগুলো যদি ট্রাফিক সার্জেন্টকে না দেখাতে পারেন তাহলে আপনি বিপদে পড়ে যাবেন।
( খ) টুলবক্স সাথে রাখাঃ গাড়িতে অতি প্রয়োজনীয় কিছু টুলস সাথে রাখতে হবে। যেগুলো আপনার মোটরযানের জরুরি মেরামতের জন্য ব্যবহার করা যাবে ।
(গ) অগ্নিনির্বাপকযন্ত্র সাথে রাখাঃ গাড়িতে যদি যেকোন কারণে অগ্নিকান্ড সৃষ্টি হয় তাহলে এটি আপনাকে আগুন নিভাতে অনেক সাহায্য করবে।
(গ) ফাস্টএইড বক্স সঙ্গে রাখাঃ গাড়িতে বা রাস্তায় যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার জন্য আপনাকে এটি সাহায্য করবে। এখানে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ঔষধ, এন্টিসেপটিক, ব্যন্ডেজ ইত্যাদি রাখতে হবে।
তবেএছাড়াও পূর্বে কোন ব্যক্তি আপনার গাড়িটি চালিয়ে থাকলে তার থেকে জেনে নিতে পারেন গাড়িতে যান্ত্রিকভাবে কোন সমস্যা আছে কিনা। আসা করি আপনারা এগুলো মেনে চললে গাড়ি চালানোর সময় অনেক উপকৃত হবেন।
One Comment